কলমেঃ ইঞ্জিঃ মোঃ সিরাজুল ইসলাম
যার দাত তার মুগুর, কথাটা গ্রাম বাংলায় সবার জানা!
‘৭১ এর মুক্তি যুদ্ধ কে কলঙ্কিত করতে “মেজর জলিলের লেখা” বলে শত বই বের হচ্ছে বেশ সস্তায় যা পড়লে নতুন প্রজন্ম মনে করবে স্বাধীনতা তো না, ভারতের লুটপাট! মুক্তি যোদ্ধা দিয়ে মুক্তি যুদ্ধের কলঙ্ক লেপন! নবী করীম সঃ ইন্তেকালের ২৫০ বছর পর কিছু লোক হাদিস লেখা শুরু করলেন, বুখারী, তিরযিমি, মুসলিম ইত্যাদি! আমি হাদিস নিয়ে কিছু বলবো না শুধু “বোখারী” হাদিস নিয়ে একটু বলবো।
হযরত বোখারী সাহেব ছিলেন দারুন কুরআন অনুসারী, পরহেজগার, বুজুর্গ কামেল ব্যক্তি! তাকে কয়েক শতকে লোকে চিনতো,মনে রেখে ছিলো! কিছু লোক বোখারী রাঃ ইন্তেকালের ৭০০ বছর পর তার নামে বোখারী শরীফ প্রকাশ করলেন যেখানে প্রচুর ভুল, অর্ধেক রিপিটেশন, নিজ মতবাদ চাপায় দেয়া! বোখারী সাহেব মৃত্যুর ৭০০ বছর পর কেন তার নামে হাদিস বই, কারন লোকে বিশ্বাস করবে! বিশ্বাস করানো ছিলো কাজ!
মেজর জলিল কে বিক্রি করা হচ্ছে তেমনি মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত করতে, কি চাও, অবশ্য ই সত্যি, মেজর জলিল বলেছেন!
প্রিয় পাঠক, ইবলিশ নাকি হাটে মানুষের লোমকূপের গোড়ায় গোড়ায়! স্বাধীনতা বিরোধী চক্র এত ই সূক্ষ্ম কারচুপির আশ্রয় নেয় সেখানে “জাতির জনক” হার মেনে মরেছেন, তার কন্যা তো শিশু! এসব কূটকচালের কাছে হাসিনারা নাবালক! মনে করুন, ১৯৭৪ সালে ২ টাকা ৩ টাকায় একখান তাতের শাড়ী কেনা যেতো! “অভাব / দুর্ভিক্ষ দেখাতে চৈনিক পন্হীরা স্বাধীনতা বিরোধীদের সাথে মিলে “শাড়ী কিনতে পারে না বলে আব্রু ইজ্জত বাচাতে নাইলনের মাছ ধরা জাল পরায়ে আন্তর্জাতিক গন মাধ্যমে তথা প্রিন্টিং মিডিয়ায় ছবি তুলে পাঠিয়েছিলো, ব্যর্থ স্বাধীনতা বুঝাতে! ইত্তেফাক এই ছবি ছেপে প্রথম আর্টিকেল ছাপে! আজ ও শুনবেন সবাই বলে ১৯৭৪ সালে শাড়ী না কিনতে পেরে জাল পরেছিলো এক “যুবতী বাসন্তী” ! কেউ ভাবে না, ৩ টাকার শাড়ী কিনতে পারে না যে, সে ৩০০ টাকার নাইলন জাল পরে কিভাবে? নাইল জাল তখন সদ্য স্বাধীন বাংলায় তৈরি হতো না কারন নাইল সূতো তৈরি
এদেশে শুরু হয় নাই!
“ব্যারিস্টার মঈনুল হোসেন” ইত্তেফাকের সম্পাদক এই এ্যাসাইনমেন্টের নায়ক। ছবি টা তুলতে সাহায্য করেছিলো মুসলিম লীগার চেয়ারম্যান। মাঝিপাড়ার ” বাসন্তী” কে তার পরিধানের শাড়ীটা খুলে জালটা পরতে বলেন ও তার সাথে থাকা চাচাতো বোন ” দুর্গতি” কে সাহায্য করতে বলেন! মুজিব ব্যর্থ তা প্রমান করা ছিলো এই ষড়যন্ত্রের মুল উদ্দেশ্য।
মজার কথা মুসলিম লীগের ঐ চেয়ারম্যান একসময় বিএনপি আওয়ামীলীগ হয়ে চাকরের হাতে ছুরিকাঘাতে মৃত্যু বরন করেন! বাংলাদেশ আওয়ামী সভাপতি সম্পাদক রা দলের কোন খোঁজ রাখতেন বলে মনে হয় না! “অধ্যাপক গোলাম আযম সাহেব” আওয়ামী টিকেট চাইলে হয়তো পেয়ে যেতেন মনে হয়, ফি একটু বেশী লাগতো!
প্রিয় পাঠক, মেজর জলিল দেখলেন, ভারত ১৫ টা জাহাজ ভর্তি করে বাংলাদেশের কলকারখানার যন্ত্রপাতি, পাকিস্তানিদের আত্মসমর্পণের হাতিয়ার নিয়ে যাচ্ছে! বাংলাদেশের সমস্ত নদী লঞ্চ স্টীমার চলার অনুপযোগী ছিলো কারন পাক সেনারা হাজার-হাজার ভাসমান মাইন ও ডুবন্ত মাইন পুতে রেখেছিলো যা রাশিয়ার নেভাল মাইন সুইপাররা ২/৩ মাস লাগায় প্রায় ২২ হাজার কিলোমিটার নদীপথ পরিষ্কার করে দেয়! খুলনা রূপসা নদীতে নদীর তলদেশ থেকে মাইন তুলতে একজন মেজর লেভেলের রাশিয়ান অফিসার মারা যায় !
মেজর জলিল কে “মুজিব নগর সরকার” Sack করে “মেজর জয়নুল আবেদীন” কে তার স্হানে অভিসিক্ত
করেছিলেন কেন তা শুধু কর্নেল ওসমানী বলতে পারবেন! কোন কুকর্মের জন্য তার মুক্তি যোদ্ধা খেতাব নাই তা কর্নেল ওসমানী বলতে পারবেন। এমন কি “সিনিয়র জিয়া” কে বাদ দিয়ে কেন কর্নেল সফিউল্লাহ কে সেনাপ্রধান করা হয়েছিলো, সব ই কর্নেল ওসমানীর নির্দেশনায়! মুজিবের কোন কথা তিনি শোনেন নাই। মুজিব সুপারিশ করেছেন কিন্তু কর্নেল ওসমানী সবার নয় মাসের চরিত্র জানতেন বলে তাকে অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে সব সময়!
প্রিয় পাঠক, ৯ নাম্বার সেক্টর ছিলো পটুয়াখালী ফরিদ পুর খুলনা নিয়ে! কিন্তু মেজর জলিলের উপর শ্রদ্ধা রেখে বলছি তিনি কতটুকু জায়গা নিয়ে যুদ্ধ করেছেন? ফরিদপুর গোপালগঞ্জ মাদারীপুর থেকে বরিশালের উজিরপুর পয়সার হাট পর্যন্ত ভারতে না যাওয়া হেমায়েত বাহিনী ৭৫০০ লোকাল রিক্রুট মুক্তি যোদ্ধা নিয়ে ৮৭ টা যুদ্ধ করেছেন! বরিশালের কুদ্দুস বাহিনী, আরব আলী বাহিনী, শিক্ষক গফুর বাহিনী, মধু বাহিনী, সুন্দর বন বাগেরহাটের মেজর জিয়া –
৯ নাম্বার সেক্টরের সাক্ষাৎ জম ছিলেন ৪/৫ হাজার যোদ্ধা নিয়ে তারা প্রত্যকে, কেউ ভারতে যায় নাই। মেজর জলিল সাহেবের নিয়মিত বাহিনী ছিলো ৩ হাজার ৩ শত জন!
মেজর জলিলের জন্য কুম্ভ অশ্রু ঝরাচ্ছেন তাহলে বাকী ১০ জন সেক্টর কমান্ডার কি ভূয়া, সেই মেজর জিয়া, মেজর হায়দার হুদা সিআর দত্ত মেজর খালেদ মোশাররফ —– ইত্যাদি!
বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, “আমি যার অপরাধের শাস্তি দেই সে বিরোধী দলের বড় নেতা হয়ে যায়, সে হয় বড় দেশ প্রেমিক!!”
বাকী অংশ আগামী কাল।