• বুধবার, ২৮ মে ২০২৫, ১১:০৭ পূর্বাহ্ন
  • [gtranslate]
Headline
হাফিজুল ইসলাম এর দুটি কবিতা গুজব! = লেখকঃ ইঞ্জিঃ মোঃ সিরাজুল ইসলাম কবিতাঃ ক্ষতবিক্ষত নওগাঁয় দলিল লেখকদের দায়িত্ব ও নৈতিকতা বিষয়ক প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত নরসিংদীতে বিদেশ-ফেরতদের ডাটাবেজ তৈরি করতে হবে যাতে তাদের পুনরেকত্রীকরণের কাজটা সহজ হয় যুক্তরাষ্ট্রে দুর্বৃত্তদের গুলিতে বিশ্বনাথের যুবক নিহত খুলনার কয়রায় গলায় শিকল দিয়ে তালা বাধা অবস্থায় বৃদ্ধের মরদেহ উদ্ধার গভীর রাতে মোংলা বন্দরের পশুর চ্যানেলে বাণিজ্যক জাহাজে সশস্ত্র ডাকাতি সিলেটের বিশ্বনাথে আইন শৃঙ্খলা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত খুলনা আর্ট একাডেমির শিক্ষার্থী কুশল বিশ্বাস জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের প্রতিকৃতি একে পুরস্কার অর্জন করে। 

বিশ্ব সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কবি নজরুল: আল মুজাহিদী

Reporter Name / ১২৬ Time View
Update : সোমবার, ২৬ মে, ২০২৫

 

নিজস্ব প্রতিবেদক:

কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ব সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কবি। তিনি স্বাধীন বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা। মুক্তিযুদ্ধের সময় জাতীয় কবির জন্মদিনে ১৯৭১ সালের ২৫ মে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র উদ্বোধন করা হয়েছিল। “বিদ্রোহী থেকেই বিদ্রোহ” বৃটিশ বিরোধী সলঙ্গা বিদ্রোহ হতে ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানে নজরুলের বাণী, কবিতা ও গান শুধু অনুপ্রেরণা যোগায় নি বরং মনে হয়েছিল নজরুল আন্দোলনে সরাসরি সামনের সারিতে এসে নেতৃত্ব দিয়েছেন। আমাদের আজকের যে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ, সেই স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের স্বপ্ন সর্বপ্রথম দেখেছিলেন কাজী নজরুল ইসলাম। তার অসাধারণ দেশাত্মবোধক গান, কবিতা ও প্রবন্ধ দিয়ে সমগ্র বাঙালি জাতিকেও স্বাধীন সার্বভৌম একটি রাষ্ট্রের স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন।’

রোববার (২৫ মে) বিকেল পাঁচটায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির এক্সপেরিমেন্ট থিয়েটার হলে “বিদ্রোহী – দ্যা নজরুল সেন্টার’’-এর আয়োজনে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৬তম জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে “বিদ্রোহ থেকে বিদ্রোহী” শীর্ষক আলোচনা সভায় আজীবন সম্মাননা প্রাপ্ত দেশবরেণ্য কবি ও নজরুল গবেষক আল মুজাহিদী এসব কথা বলেন।

১২৬তম নজরুল জন্মজয়ন্তী উদযাপন কমিটির চেয়ারম্যান ও কাঙ্ক্ষিত বাংলাদেশের সভাপতি সাবেক কর কমিশনার মো. আসাদুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন বিদ্রোহী কবিতার শতবর্ষ উদযাপন জাতীয় কমিটির মহাসচিব রাষ্ট্র চিন্তক ড. শাহরিয়ার ইফতেখার ফুয়াদ। অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক ছিলেন বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের সাবেক সচিব (ভারপ্রাপ্ত) ড. মোহাম্মদ জকরিয়া। স্বাগত বক্তব্য দেন সংস্কৃতজন মুহাম্মদ আতা উল্লাহ খান।

নজরুল উৎসবে দেশবরেণ্য কবি ও নজরুল গবেষক আল মুজাহিদী, নজরুল সংগীত শিল্পী ফাতেমা তুজ জোহরা, লেখক, গীতিকার ও ঔপন্যাসিক কবি এটিএম ফারুক আহমেদকে নজরুল সম্মাননা ২০২৫ দেওয়া হয়। নজরুল জন্মজয়ন্তী উদযাপন ও নজরুল উৎসবের মিডিয়া পার্টনার দৈনিক নিরপেক্ষ। সহ-আয়োজক ছিল বাংলাদেশ সাপোর্টারস ফোরাম ও দেশ নাট্যদল।

অনুষ্ঠানের উদ্বোধক ডক্টর শাহরিয়ার ইফতেখার ফুয়াদ বলেন, ‘সাম্য, মানবতা, প্রেম ও প্রকৃতির কবি কাজী নজরুল ইসলাম। তাঁর বর্ণাঢ্য জীবন ও সৃজনশীল কর্ম জাতির অন্তহীন প্রেরণার উৎস। বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে কবি কাজী নজরুল ইসলামের অবদান স্বাতন্ত্র্য মহিমায় সমুজ্জ্বল। নজরুল অসাম্প্রদায়িক, বৈষম্যহীন, শোষণমুক্ত ও শান্তিপূর্ণ সমাজ প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখতেন।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমরা ২০২১ সাল হতে বিদ্রোহী কবিতার শতবর্ষ উদযাপন করে তরুণ সমাজকে ও জাতীকে নজরুলের চেতনায় জাগ্রত করার প্রয়াস চালাই। যার ফসল জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের বানী, কবিতা ও গানের মূর্ছনায় ২৪’-এর সফল গণঅভ্যুত্থান। ২৪’-এর গণঅভ্যুত্থানের পরিবেশ প্রস্তুতে বিদ্রোহী – দ্যা নজরুল সেন্টার ও বিদ্রোহী কবিতার শতবর্ষ উদযাপন জাতীয় কমিটির কর্মসূচী ব্যাপক অনুঘটকের কাজ করছে। এখন আমাদেরকে নজরুলের চেতনায় সাম্য ও সম্প্রীতির বাংলাদেশ গড়তে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।’

প্রধান আলোচক ডক্টর মোহাম্মদ জকরিয়া বলেন, ‘২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানে নজরুলের বাণী, কবিতা ও গান শুধু অনুপ্রেরণা যোগায়। কাজী নজরুল ইসলাম তার অসাধারণ দেশাত্মবোধক গান, কবিতা, প্রবন্ধ দিয়ে পুরো বাঙালি জাতিকেও স্বাধীন সার্বভৌম একটি রাষ্ট্রের স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন। নজরুলময় এ বাংলাদেশে সব স্বপ্নের সম্ভাবনাকে সফল করতে ঐক্যবদ্ধ হতে চাই।’

সভাপতির বক্তব্যে মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ‘কাজী নজরুল ইসলাম হলেন বাংলা সাহিত্যের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। প্রতি বছর তাঁর জন্মজয়ন্তী গভীর শ্রদ্ধা ও সম্মানের সঙ্গে উদযাপন করি। জাতীয় কবির ৪৮তম মৃত্যু বার্ষিকীতে বেইলী রোডস্থ মহিলা সমিতির মঞ্চে ৪ দিন ব্যাপী নজরুল উৎসব করেছিলাম। নজরুলকে বাংলাদেশের জাতীয় কবি হিসেবে গেজেট প্রকাশ করার পর বাংলা একাডেমির নজরুল মঞ্চে দিনব্যাপী নজরুল উৎসব সফল করছিলাম। ছোটবেলা থেকেই নজরুল ছিলেন অসম্ভব মেধাবী ও সংগ্রামী। তিনি যেমন ছিলেন এক অসামান্য কবি, তেমনি ছিলেন সংগীতজ্ঞ, নাট্যকার, উপন্যাসিক ও একজন অসাম্প্রদায়িক চেতনাসম্পন্ন মানুষ।’

তিনি আরো বলেন, ‘নজরুলের জন্মজয়ন্তী কেবল একটি স্মরণ দিবস নয়, এটি আমাদের জন্য এক প্রেরণার উৎস। এ দিনে স্কুল-কলেজসহ নানা সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান তাঁকে স্মরণ করে নানা অনুষ্ঠানের মাধ্যমে। কবিতা আবৃত্তি, গান, নাটক, আলোচনা সভা ও রচনা প্রতিযোগিতা- সব মিলিয়ে এক উৎসবমুখর পরিবেশের সৃষ্টি হয়।’

নজরুল সম্মাননা গ্রহণ করে এটিএম ফারুক বলেন, ‘কাজী নজরুল ইসলাম ছিলেন বিংশ শতাব্দীর অন্যতম জনপ্রিয় অগ্রণী বাঙালি কবি, ঔপন্যাসিক, নাট্যকার, সঙ্গীতজ্ঞ ও দার্শনিক; যিনি বাংলা সাহিত্য তথা কাব্যে প্রগতিশীল চিন্তা-চেতনার বিকাশ ঘটান। তিনি বাংলা সাহিত্য, সমাজ ও সংস্কৃতি ক্ষেত্রের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ব্যক্তিত্ব হিসেবে উল্লেখযোগ্য। শুধ দুই বাংলাতেই নয় বিশ্ব সাহিত্যে তাঁর কবিতা ও গান সমানভাবে সমাদৃত। তাঁর কবিতায় বিদ্রোহী দৃষ্টিভঙ্গির কারণে তাঁকে বিদ্রোহী কবি নামে আখ্যায়িত করা হয়। তাঁর কবিতার মূল বিষয়বস্তু ছিল মানুষের ওপর মানুষের অত্যাচার এবং সামাজিক অনাচার ও শোষণের বিরুদ্ধে সোচ্চার প্রতিবাদ। বিংশ শতাব্দীর বাংলা মননে কাজী নজরুল ইসলামের মর্যাদা ও গুরুত্ব অপরিসীম। একাধারে কবি, সাহিত্যিক, সংগীতজ্ঞ, সাংবাদিক, সাহিত্য-সম্পাদক, রাজনীতিবিদ ও সৈনিক হিসেবে অন্যায় ও অবিচারের বিরুদ্ধে নজরুল সর্বদাই ছিলেন সোচ্চার।’
মুহাম্মদ আতা উল্লাহ খান বলেন, ‘কাজী নজরুল ইসলামকে ‘বিদ্রোহী কবি’ বলা হয় তাঁর অগ্নিঝরা লেখনির জন্য। তিনি ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে ছিলেন এক সাহসী কণ্ঠস্বর। তাঁর গান ও কবিতা বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতিকে যেমন সমৃদ্ধ করেছে, তেমনি সমাজের নিপীড়িত, শোষিত মানুষের কণ্ঠস্বর হয়ে উঠেছে। তিনি হিন্দু-মুসলিম একতার প্রতীক ছিলেন। তাঁর লেখা ইসলামী সংগীত ও গজল যেমন জনপ্রিয়, তেমনি শ্যামাসংগীতও সমানভাবে সমাদৃত। আজ আমরা কাজী নজরুল ইসলামের জন্মজয়ন্তীর গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলী ও শুভেচ্ছা জানাই। বাংলাদেশ হোক জাতীয় কবির চেতনায় সব ধর্ম, বর্ণ, গোত্র নির্বশেষে সম্প্রীতি ও সাম্যের অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ।’

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় নারী সাহিত্য পরিষদের সহ-সভাপতি কবি অধ্যক্ষ রাফিকা আফরোজ, সাধারণ সম্পাদক কবি ও কথাসাহিত্যিক নাসরিন ইসলাম শেলী, কবি ও বাচিক শিল্পী সুলতানা রাজিয়া, অভিনেত্রী ও নৃত্যশিল্পী সুলতানা চৌধুরী, কবি ইসমত আরা, আবৃত্তিকার সাইদুল ইসলাম সাইদ।

শেষে কাজী নজরুল ইসলামের গল্প অবলম্বন রচিত নাটক অগ্নিগিরি মঞ্চায়ন করা হয়। নাঠক শুরুর আগে দেশনাট্য দলের এনএইচ বাদল নাট্যকার রাস্না হিমেল অনুভূতি প্রকাশ করেন।

সকাল সাড়ে ৭টায় কাজী নজরুল ইসলামের মাজারে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন ও দোয়ার অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন ১২৬ তম নজরুল জন্মজয়ন্তী উদযাপন জাতীয় কমিটির মহাসচিব,রাস্ট্র চিন্তক ও নজরুল গবেষক প্রফেসর ডক্টর সিরাজুল ইসলাম। এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন সাবেক রাষ্ট্রদূত ও নজরুল একাডেমির সভাপতি মসয়ুদ মান্নান, কবি তাহেরা খাতুন।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
bdit.com.bd