• শনিবার, ৩১ মে ২০২৫, ১২:৪১ অপরাহ্ন
  • [gtranslate]
Headline
কবিতাঃ শিক্ষা একটি জীবনের কিরণ কবিতাঃ মায়ের সেবা দো-জাহানে আমার দেখা সুন্দরী নারী ও ভাগ্য! নীলফামারীতে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৪৪তম শাহাদাত বার্ষিকী পালিত শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৪৪তম শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে জগন্নাথপুর পৌরসভার ১ ও ২নং ওয়ার্ড বিএনপির আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত জগন্নাথপুরের মোরাদাবাদে বিধবা ছালেহা বেগমের পরিবারের উপর বখাটে জেবুল-জুবের বাহিনীর নির্মম অত্যাচার রূপসা আইচগাতি ক্যাম পুলিশের বিশেষ অভিযানে ৬০০ পিস ইয়াবাসহ এক মাদক কারবারি আটক বাগেরহাটে টানা বৃষ্টিপাতে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত বাংলাদেশ খেলাফত যুব মজলিস জগন্নাথপুর উপজেলা শাখার উদ্যোগে দাওয়াতী মিছিল অনুষ্ঠিত কবিতাঃ  রাজ ফাঁস

নির্বাচন না  ড. ইউনুস? 

Reporter Name / ৭৪ Time View
Update : শুক্রবার, ২৩ মে, ২০২৫

 

এম.কে.জাকির হোসাইন বিপ্লবী

ড. মুহাম্মদ ইউনুস—নোবেলজয়ী, সমাজে উদ্ভাবনী পরিবর্তনের রূপকার, ক্ষুদ্রঋণের ধারণাকে বিশ্বে পরিচিত ও প্রতিষ্ঠিত করা একজন আন্তর্জাতিক ব্যক্তিত্ব। বাংলাদেশের এই অল্প কয়েক মাসের রাজনীতির ইতিহাসে এক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে ড.মোহাম্মদ ইউনুস।যার কারণে জনগণ রাজনীতির কিংবদন্তি হিসেবে স্থান দিয়েছে।স্বাধীনতার পরে ড. মোহাম্মদ ইউনূসের জনপ্রিয়তা একটা ইতিহাস। অতীতে যারা সরকারি ছিলো,এত অল্প সময়ে এত জনপ্রিয়তা অর্জন করতে পারেনি। তবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়া ছিলেন জনপ্রিয়তার শীর্ষে। বর্তমান বাংলাদেশে জনগণ নির্বাচন চায়না, ড. মুহাম্মদ ইউনুস কে বিপ্লবী সরকার হিসেবে দেখতে চায়।ড. মুহাম্মদ ইউনুস বাংলাদেশের জন্য এক অমূল্য রত্ন। যাকে বিশ্ব নেতা বলা হয়। দেশের অন্তিম সময়ে অর্থনৈতিক অবস্থা স্বাভাবিক করার জন্য, বাংলাদেশের মানুষ এক মহান অভিভাবক পেয়েছেন। আমাদের সকল রাজনৈতিক দলের উচিত ড.মুহাম্মদ ইউনুস কে সর্বাত্মক সহযোগিতা করা। কিন্তু হায় আফসোস, হতভাগ্য জাতি বাঙালি। এমন একজন নেতাকে পাওয়ার পরেও আমরা নির্বাচনের জন্য একপ্রকার উম্মাদ হয়ে গিয়েছি। আজ ড. মুহাম্মদ ইউনুস এর নেতৃত্ব নিয়ে জনতার বুকে হাজার প্রশ্ন। এ দেশের রাজনীতিতে যদি ন্যূনতম উদারতা, মূল্যবোধ ও গণতান্ত্রিক পরিপক্বতা থাকতো, তাহলে কি একজন বিশ্বস্বীকৃত নাগরিক এমনভাবে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হতেন?

১. নির্বাচন বনাম অপনয়ন
যে দেশে নির্বাচন অর্থ ক্ষমতা দখলের কৌশল হয়ে দাঁড়ায়, সেখানে গণতন্ত্রের মূল ভিত্তি প্রশ্নবিদ্ধ হয়। বাংলাদেশে আজ যে নির্বাচনী ব্যবস্থা বিরাজ করছে তা “নির্বাচন” শব্দটির প্রকৃত অর্থকেই বিকৃত করেছে। একদলীয় মনোনয়ন, বিরোধী দলবিহীন নির্বাচন, এবং প্রশাসন নির্ভর ভোটগ্রহণ প্রমাণ করে যে নির্বাচন এখন একটি আনুষ্ঠানিকতা মাত্র—গণতন্ত্রের লেবাসে কর্তৃত্ববাদী শাসনের আড়াল।
এই নির্বাচনী প্রহসনের মধ্যেই প্রশ্ন জাগে—এ নির্বাচন নাকি ড. মোহাম্মদ ইউনুস? অর্থাৎ আমরা কি এমন এক রাজনৈতিক সংস্কৃতিকে মেনে নিচ্ছি, যেখানে প্রতিযোগিতা নেই, সমালোচনার জায়গা নেই, কেবল বিরুদ্ধ মতের কণ্ঠরোধ ও ব্যক্তিস্বার্থে অপপ্রয়োগই শেষ কথা?স্বাধীনতার পরে অনেক নির্বাচন হয়েছে, বিনিময়ে দেশের জনগণ কি পেয়েছে?যে দেশে গণতন্ত্রের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে, জনগণের অধিকার বাস্তবায়নের জন্য নির্বাচন করে প্রতিদ্বন্দিতার মাধ্যমে ক্ষমতায় যাওয়া, দুঃখজনক হলেও সত্য হচ্ছে নির্বাচন অনেক হয়েছে কিন্তু জনগণের অধিকার বাস্তবায়ন হয়নি। কারণ ৭১ এর পরে এই দেশে যারাই ক্ষমতায় এসেছে, তারা সবাই দেশটাকে নিজেদের ব্যক্তিগত সম্পত্তি মনে করে ভোগ করার চেষ্টা করেছে। স্বাধীনতার পর এই প্রথম একজন শাসক বাঙালি জাতি পেয়েছে, যিনি শুধু শাসকই নয় বাঙালি জাতির অভিভাবক। জনতার প্রকৃত অধিকার এবং সকল অন্যায় অনাচারের ন্যায়বিচার করার জন্য এমন একজন শাসক বাংলাদেশে থাকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করি। অথচ আজ আমরা দেখছি, জুলাই বিপ্লবের পর পরেই একটা মহল গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত।যেখানে অর্থনীতি শূন্য বাংলাদেশকে, উন্নয়নশীল রাষ্ট্রে পরিচালনা করার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা। জনগণের ভাবিমূর্তীকে বোঝার চেষ্টা করছেন। দেশের কঠিন সময় দেশের হাল ধরেছেন। সকল ষড়যন্ত্রের মোকাবেলা করে দেশকে শান্তিপূর্ণ বাংলাদেশের রূপান্তরিত করার চেষ্টা করছেন। আমাদের সবার উচিত এমন একজন শাসকের পাশে থাকা, অথচ আজ আমরা ওনার বিরুদ্ধে বিভিন্ন ষড়যন্ত্র করছি। কারণ আমাদের স্বার্থ।লুটপাট চাঁদাবাজি করে রাষ্ট্র পরিচালনা করা যেই দলগুলোর প্রধান লক্ষ্য উদ্দেশ্য, তাদের কাছে এর চেয়ে ভালো কিছু আশা করা যায় না। সৎ শাসক দ্বারায় রাষ্ট্র পরিচালিত হলে, তারা তাদের স্বার্থ হাসিল করতে পারবেনা। আর এজন্যই বার-বার ফ্যাসিবাদী কায়দায় জুলাই বিপ্লবকে ব্যর্থ করার সর্বাত্মক চেষ্টা করছে।

২.সৎ ভাবে রাষ্ট্র পরিচালনায় কি ড. মুহাম্মদ ইউনুসের অপরাধ?
ড.মুহাম্মদ ইউনুস সরাসরি কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জড়িত না হলেও, তিনি বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংকট ও উন্নয়নের প্রশ্নে বরাবরই গণতান্ত্রিক মূল্যবোধে বিশ্বাসী অবস্থান নিয়েছেন। তিনি যখন ‘নাগরিক প্ল্যাটফর্ম’ বা ‘নাগরিক ভাবনা’র মতো উদ্যোগে যুক্ত হন, তখন থেকেই তাকে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ হিসেবে দেখা শুরু করে ক্ষমতাসীন মহল। বিভিন্ন মামলা, তদন্ত ও হয়রানি—সবকিছু যেন একে একে সাজানো হলো শুধু তাকে চরিত্রহননের জন্য।
তার বিরুদ্ধে চলমান আইনি ব্যবস্থা যদি সত্যিকার অর্থে আইনানুগ হতো, তাহলে এসব মামলা এত স্পষ্টভাবে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার গন্ধ ছড়াতো না। রাষ্ট্র যখন তার সবচেয়ে কৃতী সন্তানকে অপমান করে, তখন দেশের সম্মানই ধূলিসাৎ হয়।

৩. সমাজ পরিবর্তনের রূপকারের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ
ড. ইউনুস ছিলেন এমন এক সমাজকর্মী যিনি “ব্যাংক শুধু ধনীদের জন্য নয়”—এই বিশ্বাসে গরিবদের জন্য ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। ক্ষুদ্রঋণ ধারণা, গ্রামীণ ব্যাংকের মডেল, নারীর অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন—সবই তাকে এনে দিয়েছে আন্তর্জাতিক শ্রদ্ধা। অথচ নিজ দেশে তার এই অবদান অস্বীকার করে তাকে প্রায় একজন রাষ্ট্রদ্রোহী হিসেবে তুলে ধরা হচ্ছে।
একজন ব্যক্তি কতটা অসহিষ্ণু রাজনীতির শিকার হলে তার নোবেল পুরস্কারও অবজ্ঞার বস্তুতে পরিণত হয়? এটা শুধু ইউনুসের নয়, গোটা দেশের জন্য লজ্জার।

৪. আমরা কী চাই—একনায়কতন্ত্র না ন্যায়বিচার?
আমরা কি এমন এক সমাজ চাই, যেখানে নির্বাচন মানে আনুগত্য, আর বিরোধিতা মানে দেশদ্রোহ? যেখানে শিক্ষিত, চিন্তাশীল, উদ্ভাবনী মানুষগুলো কণ্ঠরোধের শিকার হবে কেবল তারা ভিন্নমত পোষণ করে? যদি তা-ই হয়, তবে আমাদের আর গণতন্ত্রের মুখোশ পরার দরকার নেই। সত্য স্বীকার করলেই হয়—আমরা প্রতিহিংসার রাজনীতি, নেতৃত্বের ব্যক্তিপূজার এবং বাকস্বাধীনতাহীনতার পথেই হাঁটছি।

উপসংহার
ড. মুহাম্মদ ইউনুসকে হেয় করা মানে আমাদের মূল্যবোধকেই হেয় করা। “নির্বাচন না ইউনুস”—এই প্রশ্নটি আসলে বাংলাদেশের গণতন্ত্রের বিবেকের কাছে এক চরম আত্মজিজ্ঞাসা। কারণ নির্বাচন ছাড়াই যদি জনগণ সত্যিকারের গণতন্ত্রের দেখা পায়,নিজেদের অধিকার বুঝে পায় তাহলে নির্বাচনের কি প্রয়োজন? এখনো সময় আছে—আমরা যদি ন্যায়বিচার, মানবিকতা ও সত্যিকারের গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি, তবে আজই এই বিভাজনের রাজনীতিকে প্রত্যাখ্যান করতে হবে। নয়তো ভবিষ্যত প্রজন্মের কাছে আমরা ইতিহাসের অপরাধী হয়ে থাকবো।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
bdit.com.bd