স্টাফ রিপোর্টার:
বিশিষ্ট রাস্ট্র চিন্তক, নজরুল গবেষক ও কাঙ্ক্ষিত বাংলাদেশ এর সভাপতি সাবেক কর কমিশনার মোঃ আসাদুজ্জামান গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বলেন, গণতন্ত্রকে নীতি মানলে নির্বাচন ছাড়া এই নীতির প্রতিফলন বা বাস্তবায়ন অন্য কোনো উপায়ে সম্ভব নয়।জনগণের কাছে জবাবদিহিতা করার পথ হলো নির্বাচন।
এখন প্রশ্ন আসতে পারে তাহলে বাংলাদেশে এতোগুলো নির্বাচন হওয়ার পরও দেশের
আইনশৃঙ্খলা,জবাবদিহিতা,ন্যায়ক বিচার,শোষন,নিপিরন,নির্যাতন,অবিচার,অনাচার,দুর্নীতি কমলো না কেন ?
অসংখ্য কারণের মধ্যে মোটা দাগে বলা যায়ঃ
১। দেশের আয়তনের তুলনায় জনসংখ্যার আধিক্য ফলে চাহিদা ও যোগানের ঘাটতি।
২। জাতিগত সামাজিক সমস্যা :
পরনিন্দা,পরশ্রীকাতরতা,আত্মসমালোচনা বিমুখ,চৌর্যবৃত্তি,কর্মবিমুখীনতা,শিক্ষা ও কালচারের অভাব ও অপব্যাবহার।
৩। নেতৃত্বের
অদূরদর্শীতা ,স্বেচ্ছাচারিতা, স্বার্থপরতা।
৪। যোগ্য লোককে যোগ্য জায়গায় পদায়ন না করা।
৫। আইন কানুন প্রয়োগে স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতার অভাব।
রিসোর্সেস বা সম্পদ কি আছে:
১। সমতল কৃষি জমি
২। কিছু নদীনালা ,হাওর বাওর
৩। কিছু প্রাকৃতিক গ্যাস,কয়লা,হার্ডরক
৪। অভ্যন্তরীণ ও সামুদ্রিক মৎস্য সম্পদ।
৫। নানারকম সিরিয়াল ক্রপস্ ও ফলফলাদি।
৬।সর্বোপরি কর্মোক্ষোম মানবসম্পদ যদি তাদের কাজে লাগানো যায় অন্যথায় তা বুমেরাং হয়ে ক্ষতি করবে।
তিনি আরও বলেন,
এহেনবস্থায়, আশু কি কি পদক্ষেপ গ্রহণ করলে পরে দেশে শান্তি শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা ও বজায় রাখা যায়ঃ
সর্বগ্রে মনে ধারণ করতে হবে
আমার চেয়ে দল বড়
দলের চেয়ে দেশ বড়।
যোগ্য মানুষকে যোগ্য জায়গায় পদায়ন করতে হবে।এটা করলেই জনভোগান্তি অর্ধেক কমে যাবে।
দেশের ও দশের ক্ষতি হবে এমন কোনো কাজ করা যাবে না,রাজনীতি হতে হবে আম জনতার কল্যাণের জন্য।
ন্যায় বিচার ও আইনের প্রয়োগ সর্বক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠা করতে হবে, আইন ও বিচার বিভাগের উপর হস্তক্ষেপ বন্ধ করে, সম্পূর্ণ স্বাধীনতা দিতে হবে।
দুর্নীতি টাকা পাচার প্রতিরোধ করতে হবে ,স্বজনপ্রীতি পরিহার করতে হবে।
চেয়ারম্যান,মেয়র,এমপি,মন্ত্রী ইত্যাদি পদপজিশন গুলোকে ক্ষমতা মনে না করে দায়িত্ব পালন করার জন্য এসেছেন ভাবতে হবে। শাসক নয় সেবক হতে হবে। এসব পদকে যেন অবৈধ টাকা আয় ও টাকা পাচারের ক্ষেত্র বানিয়ে না ফেলি।
সরকারি বেসরকারি সকল চাকুরিজীবিগণকে জনগনকে প্রয়োজনীয় সেবা দিতে এসেছেন এটা ভাবতে হবে।যাদের পয়সায় বেতন হয় , রাস্ট্রের মালিক জনগনকে সন্মান দিতে হবে এবং তাদেরকে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করা যাবে না। প্রভুত্বসুলভ কোনো আচরণ কাম্য নয়।
দেশের অনগ্রসর এলাকার জনগোষ্ঠিকে রাষ্ট্রীয় কাঠামোর অন্তর্ভুক্ত করার জন্য বিশেষ সহায়ক ব্যাবস্থা বা স্পেস সাংবিধানিকভাবে রাখতে হবে।
বহুধা বিভক্ত শিক্ষা ব্যাবস্থা যেমন স্কুল,কলেজ,মাদ্রাসা,মক্তব,কওমি শিক্ষা,ইংরেজি ও বাংলা মিডিয়াম ইত্যাদি বৈষম্যমূলক শিক্ষা ব্যাবস্থা ধীরে ধীরে দূরীকরণ করে বৈষম্যহীন্, কর্মমূখী ও বিজ্ঞান মনস্ক আধুনিক শিক্ষা ব্যাবস্থা গড়ে তুলতে হবে।
সমস্ত শিক্ষা ব্যাবস্থায় আইসিটি বাধ্যতামুলক এবং বাংলা ইংরেজি বাদে কমপক্ষে আরো একটি ভাষা বাধ্যতামূলক করা দরকার।বিশেষকরে বিশ্ব কর্মবাজারে প্রবেশের জন্য আরবি / চাইনিজ/জাপানিজ/ ফ্রেন্জ ইত্যাদি ভাষা শিক্ষা জরুরী হয়ে পড়েছে।
তাছাড়া বৃত্তিমূলক ও কারিগরি, শিক্ষা যেমন-প্লাম্বিং,ইলেকট্রিশিয়ান,ক্যাটারিং,ক্লিনিং ,লন্ড্রি,শেপ ,কুকিং নার্সিং, ইত্যাদি প্রশিক্ষণ দিয়ে দক্ষ জনশক্তি বিদেশে রপ্তানি করা সম্ভব।অযথা সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি করে বেকারত্ব বাড়ানোর কোনো মানে হয় না।
শিশু কিশোর বেলা থেকেই প্রতিটি নাগরিককে দেশের সঠিক ইতিহাস ঐতিজ্য,স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব,কৃষ্টি, কালচার,নরমস্ প্র্যাকটিস ইত্যাদি সম্পর্কে শিক্ষাদান ও তা চর্চার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে পরিবারে ,শিক্ষাঙ্গনে।
পুনরায় পূর্বোক্ত আলোচনায় ফিরে যাই একটি দেশের উন্নয়ন ও স্থিতিশীলতার জন্য গনতান্ত্রিক সরকারের কোন বিকল্প নেই এখন কথা হচ্ছে নির্বাচন অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হওয়ার পূর্ব শর্ত কি ? ১। সর্বাগ্রে সরকারের সদিচ্ছা জরুরী।
২। যথোপযুক্ত ও নিরপেক্ষ লোককে নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ।
৩। নির্ভুল ভোটার তালিকা তৈরি।
৪। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন পর্যায়ের সরকারি বেসরকারি এনজিও কর্মকর্তাদের রিটার্নিং, প্রিজাডিং,পুলিং অফিসার নিয়োগ,ট্রেইনিং,ওয়ার্নিং।
৫। ভোটের যে সমস্ত আইন কানুন ও প্রক্রিয়া রয়েছে তা পুংখানুপুংখ অনুসরণ করা।
৬। আইন শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে নিয়োজিত বাহিনী গুলোকে,পুলিশ,রিটার্নিং অফিসারকে প্রভাবিত না করলে নির্বাচন নিরপেক্ষ হতে বাধ্য।
২৪ শে’র গণঅভ্যুত্থানের পরে দেশে যে পরিবেশ বিরাজ করছে তাতে কথা বলার স্বাধীনতা নিশ্চিত হলেও চাঁদাবাজি ,মবসন্ত্রাস চলছে। এটাকে দমন করা কঠিন কিছু নয়।
দলমত চাওয়া পাওয়া সব কিছুর ঊর্ধ্বে উঠে সরকার নিরপেক্ষ হলে ,আইন আদালত নিরপেক্ষ হলে অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন আগামী ডিসেম্বরেই করা সম্ভব বলে নাগরিকগণ মনে করেন।