স্টাফ রিপোর্টার:
সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার সৈয়দপুর শাহারপাড়া ইউনিয়নের মোরাদাবাদ গ্রামের মৃত আব্দুশ শহীদের ছেলে বখাটে জেবুল, জুবের, সুবের ও তাদের ভাগ্না এনামুল এবং তাদের সহযোগীদের সীমাহীন তান্ডবে বিধ্বস্ত একই গ্রামের মৃত হারুন মিয়ার স্ত্রী (পুত্রহারা ৪ কন্যা সন্তানের জননী) অসহায় ছালেহা বেগম। জগন্নাথপুর থানায় একাধিক অভিযোগ দায়ের করার পরও বন্ধ হয়নি জেবুল-জুবের বাহিনীর নির্মম অত্যাচার। নির্যাতিতা ছালেহা বেগমের অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, জেবুল ও জুবের গং দীর্ঘদিন ধরে তাদেরকে ভিটা থেকে উচ্ছেদ করার ষড়যন্ত্র করে আসছে। নেশার জগতের স্থানীয় বখাটে লোকদের নিয়ে জেবুল ও জুবের প্রায়ই গোপন বৈঠকে বসে তাদের বিরুদ্ধে চক্রান্ত করে এবং ভিটা না ছাড়লে তাদেরকে প্রাণে হত্যার হুমকিও দেয়। অসহায় ছালেহা বেগমের উপর মারধর, তার মেয়েদের সাথে ইভটিজিং, অপবাদ সহ তাদেরকে তুলে নেয়ার হুমকিও দিচ্ছে ফ্যাসিবাদের দোসর জেবুল ও জুবের। শুধু কি তাই, বিধবা ছালেহা বেগমের বসতঘর ভেঙে গরুঘর বানানোর অভিযোগ আছে কথিত অপরাধী চক্রের বিরুদ্ধে। এই প্রতিবেদকের সাথে আলাপকালে ছালেহা বেগমের মেয়ে মিছমা বেগম অভিযোগ করে বলেন, আপন চাচাতো ভাই হয়েও জেবুল, জুবের ও সুবের আমাদের উপর ভয়াবহ নির্যাতন চালাচ্ছে। তাদের ঘরে রাতে নেশাখোরদের আড্ডা বসে। তারা রাতে আমাদের ঘরের উপর ঢিল ছুঁড়ে মারে। তারা আমাদেরকে বাঁশের বেড়া দিয়ে সামন ও পিছন দিক দিয়ে অবরুদ্ধ করে রেখেছে। আমাদেরকে পুকুরে গোসল করতে দেয় না। এমনকি আমাদেরকে টিউবওয়েল থেকে পানি আনতেও বাধা দিচ্ছে। তাদের কারণে আমাদের স্বাভাবিক জীবনযাপন ব্যাহত হচ্ছে। তারা সমসময় হুংকার দিয়ে বলে, মোরাদাবাদের সালিশিরা আমাদের হাতের মুঠোয়। আমরা যা খুশি তাই করবো। প্রাণে বাঁচতে হলে তোমরা ভিটা ছেড়ে চলে যাও। এখানে মিডিয়া ও প্রশাসনের বলার কিছুই নাই। মিছমা বেগম আরও বলেন, গত ঈদুল ফিতরের পর স্থানীয় সালিশি ও জনপ্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে সৈয়দপুর শাহারপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের সভাকক্ষে এক সালিশি বৈঠক অনুষ্ঠিত হলে জেবুল- জুবের গংদের হটকারিতায় তা বানচাল হয়ে যায়।
জানা যায়, জেবুল- জুবের গং সালিশি বিচার অগ্রাহ্য করেছে মর্মে- মিডিয়ায় সাক্ষাৎকার দিয়েছেন সৈয়দপুর শাহারপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান সৈয়দ এমদাদ মিয়া, সালিশি মুহিবুর রহমান বাবু, শেখ মোহন মিয়া, আজকের জনকথা পত্রিকার জগন্নাথপুর উপজেলা প্রতিনিধি সাংবাদিক মোঃ আব্দুল কাহার, সৈয়দ মুজিবুর রহমান, আব্দুর রকিম, ইয়াবর মিয়া, জেবুলের বড় ভাই শেফুল মিয়া, আজকের জনকথা পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার সাংবাদিক সৈয়দ কামরান আহমদ প্রমুখ।
মিছমা বেগম আরও বলেন, বর্তমানে জেবুল- জুবের গংদের পক্ষ নিয়ে স্থানীয় সুবিধাভোগী ভুয়া সালিশিরা বিভিন্ন ফেসবুক পেইজ ও আইডি থেকে মিথ্যা বক্তব্য দিয়ে অপরাধীদের অপরাধ আড়াল করে তাদেরকে আইনের হাত থেকে বাঁচানোর অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়েছে।
বিধবা ছালেহা বেগম বলেন, গ্রামের সালিশিদের দ্বারে দ্বারে ঘুরে জেবুল- জুবের বাহিনীর নির্যাতন বন্ধে উদ্যোগ নেয়ার অনুরোধ করেও তিনি কোনো সুফল পাননি। বরং সুবিধাভোগী সালিশিদের ইন্ধনে জেবুল- জুবের বাহিনী ছালেহা বেগমের পরিবারের উপর প্রকাশ্যে দিন-দুপুরে একের পর এক হামলা করেই যাচ্ছে। জেবুল- জুবের তাদেরকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে, এমনকি ঘরবাড়ী জ্বালিয়ে দেয়ার হুমকিও দেয়।
জানা যায়, সম্প্রতি কুখ্যাত জেবুল কর্তৃক প্রকাশ্যে বৃদ্ধা ছালেহা বেগমকে অপমান করে হাত দিয়ে চেপে ধরার ও তার মেয়েদের শ্লীলতাহানীর একটি ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে! একজন অসহায় মহিলার উপর এমন নিষ্ঠুরতা দেখে জগন্নাথপুর উপজেলাবাসী জেবুল- জুবের বাহিনীর প্রতি ধিক্কার জানিয়েছেন এবং জঘন্য অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন।
বিধবা ছালেহা বেগম আরও বলেন, আমি আদালতে স্বত্ব মোকদ্দমা দায়ের করে এবং জগন্নাথপুর থানায় দুইটি অভিযোগ দায়ের করেও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। আইন- আদালত তোয়াক্কা না করে বখাটে জেবুল- জুবের জবরদখল সহ নানা অপকর্ম করেই যাচ্ছে। তারা সঠিক সালিশি ব্যক্তিদের সমালোচনা করে তাদেরকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে থাকে। শুধু কি তাই, কথিত অপরাধীরা ছালেহা বেগমের বাড়ীতে আগত সম্মানিত মেহমান ও আদর্শবান সাংবাদিকদের প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে নোংরা ভাষায় গালিগালাজ করে। অসহ্য নির্যাতনের শিকার বিধবা ছালেহা বেগমের আহাজারিতে আকাশ প্রকম্পিত হচ্ছে। অসহায় ছালেহা বেগম কথিত জঘন্য অপরাধীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রশাসনের কাছে বিনীত অনুরোধ করেছেন। অসহায় পরিবারটি সংকটময় মুহুর্তে তাদের পাশে থাকার জন্য এলাকাবাসী, দেশবাসী ও দেশের সকল মিডিয়ার প্রতি আহবান জানিয়েছেন।
সূত্র: বিধবা ছালেহা বেগম কর্তৃক সুনামগঞ্জ আদালতে দায়েরকৃত স্বত্ব মোকদ্দমা ও জগন্নাথপুর থানায় দায়েরকৃত ২টি অভিযোগপত্রের কপি, ছালেহা বেগম ও মিছমা বেগমের বর্ণনা, মিছমা বেগম প্রেরিত ঘটনার স্থিরচিত্র, ভিডিও এবং এলাকার সম্মানিত সালিশিগণের বক্তব্য।