ক্রাইম রিপোর্টার:
খুলনা নগরীর ট্যাংক রোড এলাকায় শিউলি বেগম (৪৫) নামের এক গৃহবধূকে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। বুধবার (১০ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ১১টার দিকে রবিউল ইসলামের বাড়ির নিচতলার একটি কক্ষ থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত শিউলি বেগম সালাউদ্দিন খানের স্ত্রী এবং বাড়িটির ভাড়াটিয়া ছিলেন।স্থানীয়রা জানান, সৌদি ফেরত শিউলি বেগম প্রায় ১০ দিন আগে ওই বাসায় দুই কক্ষ ভাড়া নেন—একটিতে থাকতেন তিনি ও তার স্বামী, আর পাশের কক্ষে থাকতেন তার ছেলে রিয়াদ, যিনি পেশায় একজন টাইলস মিস্ত্রি। রিয়াদের কাজে কষ্ট হওয়ায় ট্যাংক রোডের মাথায় একটি দোকান করে দিয়েছিলেন শিউলি।
প্রায় ১ মাস ১০ দিন আগে প্রথম স্বামীকে তালাক দিয়ে মো. সাগর নামের এক যুবককে দ্বিতীয় বিয়ে করেন তিনি। ঘটনার ৫–৬ দিন আগে শিউলি বেগম ব্যাংক থেকে ৫ লাখ ৭৫ হাজার টাকা উত্তোলন করে বাসায় আনেন। টাকা তোলার বিষয়টি পরিবারের সবাই জানতেন।পরের দিন সকাল ৭টা ৫৫ মিনিটে গেটের বাইরে তালা লাগিয়ে রিয়াদ বাড়ি থেকে বের হয়ে যায়। এরপর থেকে শিউলির স্বামী সাগর বারবার ফোন করলেও কোনো সাড়া পাননি। পরে তিনি বড় মেয়ে কেয়াকে ফোন করলে কেয়া বাড়িতে এসে ডাকাডাকি করেন, কিন্তু কোনো সাড়া না পেয়ে নানা বাড়ি ডুমুরিয়ায় খোঁজ নিতে যান। সন্ধ্যায় ফিরে এসে গেটের সামনে মায়ের স্যান্ডেল পড়ে থাকতে দেখে বাড়িওয়ালাকে জানান। বাড়িওয়ালা ও পুলিশ সদস্যদের সহায়তায় তালা ভেঙে ঘরে ঢুকে মায়ের নিথর দেহ দেখতে পান তিনি।
কেয়ার অভিযোগ, টাকার জন্যই তার ভাই রিয়াদ মাকে হত্যা করেছে। ঘর থেকে ৫ লাখ ৭৫ হাজার টাকার কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি বলেও দাবি করেন তিনি। পরে ৯৯৯-এ ফোন দিয়ে পুলিশকে খবর দেওয়া হলে রাতেই ঘটনাস্থলে যান সিআইডি, পিবিআইসহ তদন্তকারী সংস্থার সদস্যরা।
তদন্ত কর্মকর্তারা জানান, মরদেহের পাশ থেকে একটি শিলের পুতো উদ্ধার করা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে—মাথার বাম পাশে পুতো দিয়ে আঘাত করার পর বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে তাকে হত্যা করা হয়। শিউলির ছেলে রিয়াদ ঘটনার পর থেকেই পলাতক।
সহকারী পুলিশ কমিশনার শিহাব করীম বলেন, “ঘটনাস্থল থেকে বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে। কারা হত্যার সঙ্গে জড়িত, এখনই নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। তদন্ত চলছে, পরবর্তীতে বিস্তারিত জানানো হবে।পুলিশ জানিয়েছে, পলাতক রিয়াদকে আটকের জন্য অভিযান চলছে।