লেখকঃ ইঞ্জিঃ মোঃ সিরাজুল ইসলাম
আমার দেখা সেরা সুন্দরী নারী “ডাঃ সুলতানা জাহান!”
আমার দেখা সবচেয়ে দূঃখী নারী “ডাঃ সুলতানা জাহান! ”
আমার দেখা সবচেয়ে স্মার্ট নারী “ডাঃ সুলতানা জাহান!”
আমার দেখা সব চেয়ে হতভাগা নারী “ডাঃ সুলতানা জাহান!”
আমার সৌভাগ্য হয়েছে অনেক ফিল্মস্টার থেকে নায়ক নায়িকা খুব কাছে থেকে দেখার ! উর্দু নায়িকা “নাসিমা খান, কবরী, সহ অনেককে! কিন্তু ডাঃ সুলতানা জাহানের মত সুন্দরী স্মার্ট সম্পদের মালিক অর্থবিত্তে ভরপুর কাউকে দেখি নাই! আমি খুব কাছের থেকে দেখেছি কিন্তু তিনি দারুন অসুখী একজন নারী।
সন্মানিত ম্যামের সাথে আমার দেখা হয় খুলনায়! আমার সহধর্মিণী গর্ভবতী হলে তার অধীনে বাচ্চা ডেলিভারি হবে সে কারনে তার চেম্বারে যাতায়াত শুরু করি! তখন তিনি ২৪/২৫ বছরের একজন প্যারাগন বিউটি লেডি! স্বামী ডাঃ আব্দুল্লাহ খুলনা সদর হাসপাতালের সিভিল সার্জন হার্টের বিশেষজ্ঞ! চমৎকার মানুষ দু’জনই! আমি তার রোগী হয়ে গেলাম! তখন আমি খুলনা একটা সরকারি সংস্থার চার্জে! সারাদিন বসে লেখালেখির কাজ করায় বুকে ব্যথা হতো! সহধর্মিণীর অনুরোধে তাকে দেখালাম। তিনি একদিনেই বলেদিলেন, এটা কোন হার্ট সমস্যা নয়, মাসেল পেইন! ঔষধ ও এক্সারসাইজ দিয়ে দিলেন!
আমার স্ত্রীর সন্তান ডেলিভারি ডাঃ সুলতানার অধীনে হওয়াবার ইচ্ছে থাকলে-ও ভাগ্য তা মেনে নিলো না! বছর ধরে ঢাকায় ট্রান্সফার চেষ্টা করেও সম্ভব হলো না। হঠাৎ একরাতে নবী করীম সঃ এর রওজা মুবারক স্বপ্নে দেখলাম, পরের দিন বদলি হয়ে গেলো এবং ঢাকা আসার ১০ দিনের ভিতর আমাকে একটা অযাচিত ভিসা মেয়াদ হারাচ্ছিলো বলে আমার সৌদি আরব চলে যেতে হলো! যদি-ও আমি তখন ” রিয়াদ টেলিভিশনে ইন্টারভিউ দিয়ে মেডিকেল প্রস্তুতি নিচ্ছি! এমন কি মেডিকেল ১০ হাজার টাকা পরিশোধ করে ফেলেছি!
তবু একজন মুরব্বির অনুরোধে চলে গেলাম এবং স্বপ্নে দেখার দশদিন পর মদিনায় নবীর রওজামুবারকে পৌছে গেলাম!
প্রিয় পাঠক, আমার অনেক ভালো সরকারি চাকরি ফেলে গোঁজামিলের এক ভিসায় সৌদি আর গেলাম! ভাগ্য কেউ এড়াতে পারে না! চাকুরী যখন সফলতার মুখ দেখলো তখন আবার অন্য কারো জন্য প্রায় ততকালীন ২৭৫ টাকা সমান সিকিউরিটি দিয়ে দেশে ফিরলাম! সব ই ভাগ্য বলে মেনে নিলাম।
জীবন থেকে হারিয়ে গেলেন ডাঃ সুলতানা জাহান।
ঢাকায় তাকে খুঁজে বের করলাম আমার প্রথম ইস্যু মেয়েটা বাঁচলো না এবং দ্বিতীয় বাচ্চার জন্য তার কাছে যাওয়া। ধানমন্ডি তে দেড় দুবিঘা জমির উপর তার বাড়ী। পূর্ব পরিচয় দিলে দারুন যত্ন করলেন!
কিন্তু ততদিনে তিনি তার চার সন্তানের ১ সন্তান হারিয়েছেন এবং বাংলাদেশের শীর্ষ সন্ত্রাসী “ইমনেনের” মা এ কালো ছায়া তার সৌন্দর্যের পরে দেখা যেতো!
ইমন সন্ত্রাসী শুধু নয়, জেল, বেল, ভারত পলায়ন, গ্রেফতার আবার ঢাকে ফেরত আবার গ্রেফতার, আবার
এমনি এই সুন্দরী মহিলার জীবন চলছে! তিনি নিজে ও ঘরে নির্যাতনের শিকার, ইমন বাসায় ফিরতো এবং তার অন্য ছেলেটাকে ফ্যানের সাথে বেধে মারতো যতক্ষণ হুশ থাকতো, সে চীৎকার করতো,”মা বাঁচা ও, কিন্তু মা নিরুপায়, স্ব সশস্ত্র ইমান কে কিছু বলা যেতো না!
ততদিনে ইমন মোহাম্মদ পুর, ধানমন্ডি, হাজারীবাগ মন্ত্রনালয় ভাগের মত তেজগাঁও মোহাম্মদ পুর ধানমন্ডি
মামুন হেলাল জোসেফ কে সব নেতা বানিয়ে সন্ত্রাস পরিচালনা করছে! ততদিনে নায়িকা দিতির স্বামী নায়ক সোহেল সহ ডজন খানেক খুন করে ফেলেছে!
ইমন ভালো ছিলো, ছোট রাজা ছিলো ২০০১ থেকে ২০০৬ পর্যন্ত খালেদা আমলে! বিএনপি সাংসদ পিন্টু তার ডান হাত ছিলো! ডাঃ সুলতানা জাহান ছিলেন বেগম খালেদার ব্যক্তিগত চিকিৎসক। আবার তিনি ছিলেন বঙ্গবন্ধু মেডিক্যালের গাইনী বিভাগের চেয়ারম্যান।
কেন ইমন সন্ত্রাসী হলো, কেন R A B তৈরি করলেন খালেদা, কেন এত সন্ত্রাসী তৈরি হলো, মুরগী মিলন, সুইডেন আসলাম, কালা জাহাঙ্গীর, সুব্রত বাইন সহ অর্ধ সাহস্র সন্ত্রাসী কাদের ছত্রছায়ায় তৈরি হলো তা সুযোগ হলে আবার লেখা যাবে। আজ শুধু বলবো “সব ধর্মের লোক ” ভাগ্য ” কে বিশ্বাস করবেন! ভাগ্য ও মানব অভিশাপ পিছে পিছে ধায়! এমন সুন্দরী বিউটিফুল কুইন “ডাঃ সুলতানা জাহান” স্বামী হারিয়েছেন অনেক কম বয়সে! তিনি ৬০ বছর বয়সে ও হাসপাতালে ডিউটি তে যেতেন আপনি দেখলে মনে করতেন, “তিনি কোন বিবাহ অনুষ্ঠান থেকে এলেন”! এত সাজগোছ মেকআপ তিনি করতেন! সর্বোচ্চ সহনশীল ওজনের স্বর্নের কানের দুল সহ সব গহনায় সজ্জিত হয়ে তিনি হাসপাতাল ডিউটি তে যেতেন! টিপটপ পরিচ্ছন্ন থাকতেন সবসময় একজন হিংসা বিদ্বেষ অহংকার হীন মহিলা! কিন্তু সুখ ভাগ্যে সুপ্রসন্ন হলো না! তিনি সাংবাদিকদের সব সময় বলেন, ” আমি সন্ত্রাসীর মা!” এত টাকা এত সম্পদ এত পরিচিতি নাম যশ খ্যাতি কিন্তু মনের শান্তি এলো না কোনদিন — সব ভাগ্য !
আমি আর সৌদি আরব ফেরত গেলাম না এদেশে অনেক চুয়েট বুয়েট রুয়েটের ইঞ্জিনিয়ারদের সাথে প্রতিযোগিতা ইন্টারভিউ দিয়ে বিদেশি কোম্পানির জব হয়ে গেলো। সে কোম্পানি এত হেভি ইন্ডাস্ট্রি ছিলো যা “মুজিব সরকার” জাতীয় করন করেছিলেন, মেজর জিয়া আবার ছেড়ে দেয়া কোম্পানির চাকুরী। সব ভাগ্য! যাদের জন্য আমার বিদেশ ছাড়তে হলো তারা কেনদিন ও খোঁজ নেয় নাই, অথচ আমরা ভুক্তভোগী হয়ে ও তাদের একের পর এক উপকার করে গেছি! মনে রাখি নাই, আমি যে টাকা বন্ড দিয়ে রেখে এসেছি তা ব্যাঙ্কে রাখলে আজ পর্যন্ত হয়তো দেড় দু কোটি টাকায় উন্নিত হতো! মানুষ কবে মানুষ হবে তা শুধু সৃষ্টি কর্তা জানেন!